বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫০ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : এবার বেতন বাড়ার তালিকায় রয়েছেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা। তাদের বেতন বাড়িয়ে প্রায় দ্বিগুণ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বাড়ানো হচ্ছে ভাতাও। এ লক্ষ্যে এরইমধ্যে সংশ্লিষ্ট ৫টি আইন সংশোধনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এগুলো অনুমোদনের জন্য আজ মন্ত্রিপরিষদ সভায় উঠছে। সূত্র জানায, নতুন বেতন কাঠামোতে রাষ্ট্রপতির সম্ভাব্য বেতন এক লাখ ১৯ হাজার টাকা এবং প্রধানমন্ত্রীর সম্ভাব্য বেতন এক লাখ ১৪ হাজার টাকা। আর মন্ত্রীদের বেতন এক লাখ চার হাজার টাকা, প্রতিমন্ত্রীদের ৮৭ হাজার ৫শ টাকা, উপমন্ত্রীদের বেতন ৮৬ হাজার ৫শ টাকা হতে পারে। বর্তমান বেতন কাঠামোতে রাষ্ট্রপতির বেতন ৬১ হাজার ২শ টাকা, প্রধানমন্ত্রীর ৫৮ হাজার ৬শ টাকা, মন্ত্রীদের ৫৩ হাজার ১শ টাকা, প্রতিমন্ত্রীদের ৪৭ হাজার ৮শ টাকা এবং উপমন্ত্রীদের বেতন ৪৫ হাজার ১৫০ টাকা। নতুন বেতন কাঠামোতে রাষ্ট্রপতির সম্ভাব্য বেতন বাড়ছে ৫৭ হাজার ৮শ টাকা, প্রধানমন্ত্রীর ৫৫ হাজার ৪শ টাকা, মন্ত্রীদের ৫০ হাজার ৯শ টাকা, প্রতিমন্ত্রীদের ৩৯ হাজার ৭শ টাকা এবং উপমন্ত্রীদের বেতন বাড়ছে ৪১ হাজার ৩৫০ টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ অন্য মন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদের বেতন বাড়াতে হলে আইন সংশোধন করতে হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সংশ্লিষ্ট আইনগুলো সংশোধন করে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ অন্য মন্ত্রীদের বেতন বাড়ানোর প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে। সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদনের পর একটি গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হয়। কিন্তু রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রীদের বেতন বাস্তবায়নের আগে সংশ্লিষ্ট আইনের সংশোধনী মন্ত্রিপরিষদ সভায় অনুমোদনের পর তা জাতীয় সংসদে পাস করার মধ্য দিয়ে এটি কার্যকর হয়। সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের এবং সংসদ সদস্যদের বেতন বাড়ানো হয়। ৭ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য অষ্টম জাতীয় পে-স্কেল মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয়। সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন কাঠামোর গেজেট খুব শিগগিরই জারি হবে বলে রোববার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সাংবাদিকদের জানান। বেতন বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট ৫টি আইনের সংশোধনী খসড়া নীতিগত অনুমোদনের জন্য আজ মন্ত্রিপরিষদ সভায় তোলা হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে- দ্য প্রেসিডেন্টস (রেম্যুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) সংশোধনী অ্যাক্ট-২০১৫, দ্য প্রাইম মিনিস্টারস (রেম্যুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) সংশোধনী অ্যাক্ট ২০১৫, দ্য মিনিস্টারস, মিনিস্টারস অব দ্য স্টেট অ্যান্ড ডেপুটি মিনিস্টারস (রেম্যুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) সংশোধনী অ্যাক্ট ২০১৫, দ্য স্পিকার অ্যান্ড ডেপুটি স্পিকার (রেম্যুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) সংশোধনী অ্যাক্ট ২০১৫, দ্য মেম্বার অব পার্লামেন্ট (রেম্যুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) সংশোধনী অ্যাক্ট ২০১৫। এর আগে ২০০৯ সালে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বেতন বাড়ানো হয়েছিল। ছয় বছর পর তাদের বেতন-ভাতা বাড়ছে। জানা গেছে, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার ও সংসদ সদস্যদের বেতন বৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ছে তাদের বিভিন্ন ভাতাও। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান মন্ত্রিসভায় ৩১ জন মন্ত্রী, ১৮ জন প্রতিমন্ত্রী ও দুজন উপমন্ত্রী রয়েছেন। আর মন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা রয়েছেন পাঁচজন। মন্ত্রিসভার সদস্য, জাতীয় সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বেতনের সঙ্গে জাতীয় সংসদের ৩৫০ জন সদস্যের (এমপি) সম্মানী বাড়ানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। সংসদ সদস্যদের সম্মানী বাড়ানোর কাজ করছে সংসদ সচিবালয়। এদিকে পে-স্কেল পুনর্র্নিধারণের (ফিক্সেশন) কাজ চলছে। অষ্টম জাতীয় পে-স্কেলে সচিবদের বেতন বাড়ানো হয়েছে সর্বনিম্ন ৯৫ শতাংশ। আর ২০ নম্বর গ্রেডভুক্ত কর্মচারীদের বেতন বাড়ানো হয়েছে সর্বোচ্চ ১০১.২৩ শতাংশ। বর্ধিত বেতন গত জুলাই থেকে কার্যকর করা হলেও কর্মচারীরা এখনও পুনর্র্নিধারিত হারে বেতন পাচ্ছেন না। বর্তমানে তাদের বেতন ফিক্সেশনের কাজ করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আগামী মাসে বকেয়া বেতনসহ বর্ধিত হারের বেতন উত্তোলন করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তারা জানান, নতুন বেতন কাঠামোর গেজেট জারির সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে আছে। রোববার অর্থমন্ত্রী পেরু থেকে দেশে ফিরেছেন। এখন রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে এ মাসের শেষেই এর গেজেট জারি হতে পারে।